আল্লাহ তায়ালা একটি মশার মাধ্যমে নমরুদকে যেভাবে ধ্বংস করেছিল সত্য কাহিনী। ----Alhadi

 



আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ.বন্ধু রা কেমন আছেন?  আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন.বন্ধুরা আমাদের পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক শয়তান এসেছে তারা নিজেকে খোদা দাবি করেছিল আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে আর যারা আল্লাহর পথে চলেছে আল্লাহ তায়ালা তাদের কে অধিক সম্মানের অধিকারী করেছিল । তো  আজ আমরা জেনে নেব নম্রুত এবং ইব্রাহিম আলাইহি সালামের মধ্যকার ঘটনা সম্পর্কে. এবং অবশেষে আল্লাহ পাক একটি ল্যাংড়া মশার মাধ্যমে, কিভাবে নমরুদকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, সেই বিস্ময়কর সত্য ঘটনা. 

ঐতিহাসিক গণের মতে দুনিয়া জুড়ে রাজত্ব করা বাদশার সংখ্যা ছিল চারজন. এই চারজন বাদশার মধ্যে দুইজন ছিলেন মোমেন এবং দুইজন ছিল কাফের. মুমিন দুজন হলেন এবং কাফের দুইজন হলো নমরুদ এবং বকতে নসর. উম্মতে মুসলিমার পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম পশ্চিম ইরাক বসরার নিকটবর্তী বাবেল শহরে জন্মগ্রহণ করেন. বাবেল হচ্ছে ইরাকের একটি শহর তৎকালীন সময়ে পৃথিবীর সমৃদ্ধতম নগরী ছিল বাবেল যে বর্তমানে বাগদাদ নামে পরিচিত. 

এখানে তখন কালোদিয়া জাতি বসবাস করতো. তাদের একছত্র সম্রাট ছিল নম্রুত. ঐতিহাসিক গনদের মতে নমরুদ চারশো বছর রাজত্ব করেছিল. ফলে সে জুলুম, অত্যাচার, দাম্ভিকতা এবং সীমা লঙ্ঘনের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে নিজেকে খোদা দাবি করা শুরু করলো. নবী ইব্রাহিম যখন তার সম্প্রদায়কে বারবার দাওয়াত দিচ্ছিলেন কিন্তু তাঁর সম্প্রদায়ের কোন হুশ ফিরছিল না. তখন ইব্রাহিম তাদের দেব মন্দিরে ঢুকে তাদের মূর্তি ভেঙেছিলেন সম্প্রদায়ের লোকজন এটা দেখার পর ইব্রাহিম আলাই সাল্লামকে নমরুদের দরবারে পেশ করে নবি ইব্রাহিম এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের দাওয়াত য়ার সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করলেন. 



নমরুদ চারশো বছর রাজত্ব করে. এর ফলে সে উদ্ধত এবং অহংকারী হয়ে উঠেছিল. এবং নিজেকে একমাত্র উপাস্য ভেবেছিল. নবী ইব্রাহিম আলাই সালামকে যখন নবরুজের দরবারে পেশ করা হয় তখন নমরুদ ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো বলল তোমার উপাস্য কে? নমরু ভেবেছিল ইব্রাহিম হয়তো তাকেই উপাস্য বলে শিকার করবে. কিন্তু নির্ভীক কণ্ঠে নবী ইব্রাহিম আলাইসাল্লাম জবাব দিলেন, আমার পালন কর্তা হচ্ছেন তিনি যিনি মানুষকে বাচান এবং মারেন. 

তখন কাফের নম্রদ বললো আমিও বাঁচাই এবং মারতে পারি।  অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিকে খালাস দিয়ে মানুষকে বাঁচাতে পারি. খালাসের আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েও মারতে পারি. এই কথা বলে নম্রুত তখনই একজন নির্দোষ ব্যাক্তিকে এনে জল্লাদকে আদেশ করল তাকে হত্যা করে ফেলো.

 এবং মৃত্যুর ঘটে নামিয়ে দাও জল্লাদ তখনই তার আদেশ পালন করলো. আর একজন মৃত্যুর দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে েলখানা হতে ডেকে এনে নম্রুত আদেশ করল যাও আমি তোমাকে জীবনদান করলাম. এরপর নমরুদ ইব্রাহিম আলাই সালামের দিকে লক্ষ্য করে বলল দেখলে আমিও কিভাবে জীবন এবং মৃত্যু দান করে থাকি. 

তবে আমার আর তোমার খোদার মধ্যে বিশেষত্ব কি রইলো? এরপর নবী ইব্রাহিম আলাই সালাম তার বর্তী যুক্তি পেশ করে বললেন, আমার আল্লাহ সূর্যকে পূর্ব দিক থেকে উদিত করেন. আপনি সূর্যকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত করে দেখান. এরপর কাফের নমরুদ হতবদ্ধি হয়ে পড়ল. নমরুদ অহংকারে ফেটে পড়ল. এবং নবী ইব্রাহিম আলাই সাল্লামকে জ্বলন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ জারি করল. 



এরপর একটি ভিন্ন ির্মাণ করা হলো এবং সেখানে বিরাট আগুন জ্বালানো হলো. তারপর ইব্রাহিম আলাই সালাম কে একটি মিনযানিক যন্ত্রের মধ্যে বসিয়ে সেই আগুনে নিক্ষেপ করা হলো. আগুনে িক্ষেপের সময় নবী ইব্রাহিম বলেছিলেন আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট. তিনিই হচ্ছেন উত্তম অভিভাবক. আল্লাহ পাক বলেন আমি হুকুম করলাম আগুন. তুমি থেমে যাও এবং ইব্রাহিমের প্রতি শীতল ও শান্তিদায়ক হয়ে যাও. এরপর আগুন শীতল হয়ে গেল.

 নবী ইব্রাহিম আলাই সালাম অগ্নি ড়িক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ফিরে আসলেন. একটি বর্ণনা থেকে জানা যায়, নবী ইব্রাহিম আলাই সালাম চল্লিশ কিংবা পঞ্চাশ দিন আগুনের মধ্যে অবস্থান করেছিলেন. এই সম্পর্কে নবি ইব্রাহিম বলেন যতদিন আমি আগুনের মধ্যে কাটিয়েছি ততদিন আমি এত শান্তি এবং আরামে কাটিয়েছি যে, এর চেয়ে বেশি আরাম আমি জীবনে কখোনই উপভোগ করিনি. আল্লাহ পাক বলেন তারা চক্রান্ত করে ইব্রাহিমের ক্ষতি করতে চেয়েছিল. 

কিন্তু আমি তাদেরকে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত করে দিলাম. অন্যখানে আল্লাহ বলেন, জাহান্নামই হলো তাদের জন্য নিকৃষ্ট আবাস ও ঠিকানা একটি বর্ণনা থেকে জানা যায়, নমরুদের কাছে সঞ্চিত খাদ্য ভান্ডার ছিল. লোকজন দলে দলে নমরুদের কাছে সেই খাদ্য আনার জন্য যেত. হযরত ইব্রাহিমও এমন একটি দলের সঙ্গে নমরুদের কাছে খাদ্য আনতে যান. সেখানে সাথে নবি ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়.

 এর ফলে নমরুদ ইব্রাহিম আলাই সালামকে খাদ্য না দিয়েই ফিরিয়ে দেয় নবী ইব্রাহিম শূন্য পাত্র নিয়ে ফিরে আসেন. এরপর ইব্রাহিম আলাই সালাম যখন নিজের বাড়ির কাছে আসলেন, তখন তার কাছে াকা দুইটি পাত্রে মাটি ভর্তি করে আনলেন এবং মনে মনে ভাবলেন বাড়ি পৌঁছে সাংসারিক কাজে জড়িয়ে পড়বেন. এরপর নবী ইব্রাহিম আলাই সালাম বাড়িতে নিজের ঘরে প্রবেশ করে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে পড়েন. কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন. 

ইব্রাহিম আলাই সালামের স্ত্রী সারা পাত্রর কাছে যান. যেই দুটি পাত্রে নবি ইব্রাহিম মাটি ভরে ছিলেন. তিনি সেই পাত্র দুইটিতে উৎকৃষ্ট খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ভর্তি দেখতে পান. এবং সেটা দিয়ে তিনি খাদ্য তৈরি করেন. এরপর ইব্রাহিম ঘুম থেকে জেগে ওঠে, রান্না করা খাদ্য দেখতে পেলেন. তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা তোমরা কোত্থেকে পেলে? স্ত্রীর সারা জানালেন, আপনি যা এনেছিলেন, সেটা থেকেই এটা তৈরি করা হয়েছে. 

এই সময় ইব্রাহিম আলাইহি সালাম বুঝতে পারলেন, আল্লাহতালা বিশেষ খাদ্য হিসাবে তাদেরকে এরিজিক দান করেছেন. বর্ণনা করেছেন, অহংকারী বাদশা নমরুদের কাছে, আল্লাহ পাক একটি ফেরেস্তা পাঠালেন. ফেরেস্তা ড়ুদের কাছে এসে, তাকে আল্লাহর প্রতি ইমান আনতে বললো কিন্তু নমরুদ সেটা অস্বীকার করলো. 

এরপরে দ্বিতীয় বার এবং তৃতীয় বার ফেরেস্তা নমরুদকে আহ্বান জানালো. কিন্তু প্রত্যেকবারে নম্রুত অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে দেয় যে তুমি তোমার বাহিনীকে একত্র করো আর আমিও আমার বাহিনীকে একত্রিত করি পরের দিন যখন সূর্য উদয় হবে সেই সময় নম্রুত তার শৈল সামন্তের সমাবেশ ঘটায়. অন্যদিকে আল্লাহপাক অগণিত মশা প্রেরণ করলেন. 

মশার সংখ্যা এত বেশি যে, তাতে নমরুদবাহিনী, সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখতেও সক্ষম হয়নি. আল্লাহ পাক এই মশাবাহিনীকে তাদের উপর লেলিয়ে দেন. এর ফলে মশাবাহিনী গিয়ে তাদের রক্ত মাংস খেয়ে সাদা হাড় বের করে ফেলে. এই মশাবাহিনীর মধ্যে একটি মশা নমরুদের নাকের ছিদ্র পথ দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে. চারশো বছর পর্যন্ত এই মশাটি নমরুদের নাকের ছিদ্রে অবস্থান করে. এবং দংশন করতে থাকে. 

এই দীর্ঘ সময়ে নম্রুদ তীব্র যন্ত্রণায় হাতুড়ি দিয়ে নিজের মাথা ঠুকতে থাকে. অবশেষে এভাবেই আল্লাহপাক নমরুদকে ধ্বংস করেন. যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে ধুঁকে ধুঁকে নমরুদ ধ্বংস হয়ে যায়. নিজেকে খোদা দাবি করা নমরুদকে আল্লাহপাক একটি ছোট্ট মশার মাধ্যমে ধ্বংস করে দেন. মূলত আল্লাহ কাফেরদের সমস্ত কৌশল বর্বাদ করে দেন. এবং দুনিয়াতে শাস্তি প্রদান করেন. আর পরকালের শাস্তি তো আরও ভয়ঙ্কর.

পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই যুগে যুগে  এরকম হাজারো শয়তান আসবে এবং আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করবে তবে আমাদেরকে আমাদের ঈমানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন ঈমানকে ধ্বংস না করে যেন আমরা আমাদের ঈমানকে সবসময় আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করব আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে এই ইসলাম কে আঁকড়ে ধরে রাখার তৌফিক দান করুক।  আমিন 

প্রিয় পাঠকগণ এখানে কোন ধরনের বানান ভুল ত্রুটি থাকলে সুন্দর ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন , পাশে থাকা কালো বেল আইকন এ ক্লিক allow button এ ক্লিক করে রাখতে পারেন । যাতে আমাদের প্রত্যেকটি পোস্ট আপলোড করার সাথে সাথে আপনি পেয়ে যান । সবাইকে ধন্যবাদ আল্লাহ হাফেজ

Post a Comment

0 Comments