ছবিটি কাল্পনিক |
আসসালামু আলাইকুম, বন্ধুরা কেমন আছেন আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন আমরা হয়তো অনেকেই জানি যে আল্লাহর নবী হযরত ইউসুফ আলাইহি সালাম কে নীল নদে দাফন করা হয়েছিল. তারপরে এটি উদ্ধার করেছিলেন আল্লাহর আরেক নবী মূসা আলাইহি সালাম আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেনই বা নীল নদে দাফন করা হয়েছিল এবং এর পেছনে কি কারণ ছিল চলুন তবে নেওয়া যাক হজরত ইউসুফ আলাইহি সালাম নীল নদে দাফন করা হয়েছিল যে কারণে হজরত ইউসুফকে যখন আল্লাহতালা মিশরের প্রিয় বানালেন তখন মিশরের সবাই তাকে ভালো তার রূপ ও গনের জন্য.
এমনকি মিশরের বাদশাহ সহ তাকে জিজ্ঞাসা না করে কোনো কাজ করতেন না. একবার সে এলাকায় দুর্ভিক্ষ হয়. যার কারণে কোথাও খাদ্যশস্য ছিল না. কিন্তু আল্লাহতালা ইউসুফ আলাইহি সালামের জন্য মিশরকে এই ভয়াবহ ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে রাখেন মানুষ দূরদূরান্ত থেকে এসে খাদ্যশস্য কিনে নিয়ে যেত একদিন ইউসুফ আলাইহি সালাম এর ভাই যিনি ইউসুফ আলাইহি সালামকে কুয়াতে ফেলে দিয়েছিল তিনিও মিশরে চলে আসে ইউসুফ আলাইহি সালাম যখন এই বিষয়ে জানতে পারেন যে তার ভাই এখানে এসেছে তখন তিনি পরিবারকে মিশরে নিয়ে আসার চিন্তা করেন.
তিনি তার ভাইদেরকে বললেন এই পাঞ্জাবী আমার বাবার চোখের উপর রাখবে তাহলে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন. তারপর বাবা ও মাকে মিশরে নিয়ে এসো, ইউসুফ আলাই সালামের পিতা হযরত ইয়াকুব আলাইহি সালাম যখন এ কথা জানতে পারেন তখন তিনি পুত্রের ভালোবাসায় মিশরে চলে আসেন অন্যদিকে ইউসুফ মিশরের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিল. তাই রাজা প্রজা সবাই তাদের স্বাগতম জানানোর জন্য শূন্য সামন্ত নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল. কারণ ইউসুফ আলাইহি সালামের বাবা-মা বলে কথা.
বাবা তার ছেলেকে দূর থেকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন এই সৈন্যবাহিনী কার? তার ছেলেরা, উত্তর দিলেন, এই সৈন্যবাহিনী দল আপনার ছেলের তখনই এক আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে থাকলেন. এরপর হজরত জিব্রাইল আলাইহি সালাম নাজিল হয়ে বললেন হে আল্লাহর নবী ইয়াকুব দেখো আল্লাহ তোমার ছেলেকে কতটা দিয়েছেন. আর পিতা পুত্রের মিলন দেখে আকাশের ফেরেশতারা জমিনে চলে এসেছে.
তখন ও ইউসুফ আলাইহি সালাম মিলে সবার সামনে কান্না করতে লাগলেন কারণ চল্লিশ বছর পর তাদের সাক্ষাৎ হয়. তারপরই পিতাকে জাঁকজমক ভাবে তার আসনে বসালেন তার ঈমান ও মর্যাদা মিশরের বাদশা নিজের মাথার মুকুটমের পায়ের কাছে রেখে আল্লাহর নবীকে কবুল করলে এবং ইউসুফ আলাইহি সালাম ও তার পিতাকে আল্লাহর নবী বলে স্বীকার করলেন. আর বনি ইসরাইলরা মিশরের অধিবাসীদের সঙ্গে থাকতে শুরু করলেন.
ইউসুফ আলাইহি সালাম এসময় একটা শহর করলেন যার নাম তিনি কৌশান রাখলেন সময় চলে যাচ্ছে এই ঘটনার প্রায় চব্বিশ বছর পর ইউসুফ আলাইহি সালামের পিতা ইয়াকুব আলাইহি সালাম যখন মৃত্যু শয্যায় তখন শেষ ইচ্ছা ছিল তাকে যেন তার বাবার পাশে কবর দেওয়া হয় তিনি মারা যাওয়ার পর ইউসুফ আলাইহি সালাম তার বাবার ইচ্ছামত হযরত ইব্রাহিম এবং হজরত ইশাক আলাইহি সালামের পাশে দাফন করেন এবং ফিরে এসে মিশরের শাসন বার চালানো শুরু করেন.
ছবিটি কাল্পনিক |
মিশরের প্রতিটি মানুষ বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই ইউসুফ আলাইহি সালামকে আল্লাহ তায়ালার রহমত মনে করতেন. যখন ইউসুফ আলাইহি সালাম মারা যান তখন সবাই চাইছিলেন তার কবর মুবারক যেন তাদের মহল্লায় বানানো হয়. যাতে তাদের ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত এবং বরকত বর্ষিত হয়. শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো যে ইউসুফ আলাই সালামের দেহকে কফিনে করে নীল নদে দাফন করা হবে.
যাতে নীল নদের তার দেহ মোবারক চেয়ে সে পানির সমস্ত ঘরে পৌঁছায় যেন সবার উপরে তার জন্য আল্লাহতালার পক্ষ থেকে রহমত বর্ষিত হয় তারপর ইউসুফ আলাই সালামের দেহ মোবারক সেই অনুযায়ী নীল নদে দাফন করা হলো হজরত ইউসুফ আলাইহি সালাম মৃত্যুর আগে বলেছিলেন যে, আমি হজরত জিব্রাইল সালামের কাছ থেকে শুনেছি এমন এক সময় আসবে যখন আমার পরিবার এখান থেকে হিজরত করে অন্য জায়গায় চলে যাবে।
তখন তোমরা আমার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী আমার কবরকে সঙ্গে নিয়ে যাবে এবং আমার বাবা দাদা এবং বড় দাদার পাশে দাফন করে দিও এভাবেই দিন কাটতে লাগলো এবং সময় বদলাতে থাকলো. এরপর মিশরের নতুন বাদশা বনি ইসরাইলের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করল. তখন সেই অত্যাচার শেষ করার জন্য কয়েকশত বছর পর আল্লাহতালা প্রেরণ করলেন মুসা আলাইহি সালাম কে।
যখন ফেরাউনের শাসন বেবস্থা ধ্বংস করে দেয় এবং মিশর থেকে তার সম্প্রদায়কে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন তখন জিব্রাইল নাজিল হলেন এবং বললেন ইউসুফ আলাাইহি সালাম মারা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন যে আমার সম্প্রদায় যখন এখান থেকে হিজরত করবে তখন যেন আমার দেহ সঙ্গে করে নিয়ে আমার বাপ, দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়.
তখন মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন যে কে এমন আছে যিনি জানেন যে ইউসুফ আলাই সালামের কবর কোথায় দাফন করা রয়েছে? তখন এক বৃদ্ধ নারী বললেন আমি জানি কবর কোথায় রয়েছে তারপর সেই বৃদ্ধা মুসা আলাইসাল্লামকে নিল নদীর তীরে নিয়ে গেলেন এবং তখনই ইউসুফ আলাই সালামের কফিনে মরা দেহ নীল নদ থেকে বের করে তাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনে নিয়ে পৌঁছে গেলেন।
প্রায় চারশত বছর পর হজরত ইউসুফ আলাইহি সালামের শেষ ইচ্ছা পূরণ হয়. তাকে তার বাবা দাদা ও বড় দাদার পাশে দাফন করা হয়. সুবাহানাল্লাহ।
তাহলে আজ এই পর্যন্তই।বন্ধুরা যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করুন, শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন . সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
0 Comments