হযরত মূসা আঃ ও কিযির আঃ এর একটি শিক্ষনীয় গল্প। ----Alhadi HB

মূসা আঃ ও কিযির আঃ এর কাহিনী,মূসা আঃ এর মোজেজা,মুসা নবী আল্লাহর সাথে সাক্ষাত, Alhadi hb,nhd501,smdihan,মূসা আঃ এর জীবনী,মুসা আঃ এর দোয়া,মূসা আঃ জীবনী


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ , বন্ধুরা কেমন আছেন আশা করি সবাই ভাল আছেন, আজ  আলোচনা করব  হজরত খিজির আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের  একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে।  তো চলুন শুরু করা যাক,  হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত. তিনি বলেন হজরত উবাই ইবনে কাব রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে একটি সমাবেশে ভাষণ দিতে মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন. তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো? আচ্ছা কোন ব্যক্তি সর্বাধিকজ্ঞানী? উত্তরে তিনি বললেন আমি সর্বাধিক জ্ঞানী. 

মহান আল্লাহতালা কে সর্বাধিকজ্ঞানী   না বলার  কারণে আল্লাহতালা তাকে তিরস্কার করে বললেন বরং দুই সাগরের সমগম স্থলে আমার এক বান্দা আছে যিনি তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী. হজরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেন হে আমার প্রতিপালক তার নিকট পৌঁছতে কে আমাকে াহায্য করবে. কখনো সুফিয়ান এভাবে বর্ণনা করেছেন. আমি কিভাবে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারি? তখন তাকে বলা হলো তুমি একটি থলিতে করে একটি মাছ নাও. যেখানে তুমি মাছটি হারাবে সেখানেই আমার সেই বান্দা আছে. তখন হযরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম   একটি মাছ নিলেন. এবং থলিতে রাখলেন. অতঃপর মাছ নিয়ে তার সঙ্গী ইউসা বিন নুনকে সাথে নিয়ে চললেন. 

শেষ পর্যন্ত তারা একটি পাথরের কাছে পৌঁছালেন এবং তার উপর মাথা রেখে বিশ্রাম নিলেন. হজরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  ঘুমিয়ে পড়লেন. এই সময় মাছটি থলি থকে বের হয়ে লাফিয়ে সমুদ্রে চলে গেলো. প্রসের সমুদ্রে শোরুঙ্গের মতো পথ করে দিলো. আর আল্লাহতালা মাছটির চলার পথে পানির প্রবাহ থামিয়ে দিলেন. ফলে তার গমন পথটি সুড়ঙ্গের মতো হয়ে গেল. তার উভয় অবশিষ্ট রাত এবং পুরোদিন পথে চললেন. পরদিন সকালে হজরত মূসা আলাইহিস সালাম তার   সাথীকে বললেন আমরা তো সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি. আমাদের খাবার নিয়ে এসো. 

হজরত  যে স্থানে যাবার কথা বলেছিলেন, সে স্থান অতিক্রম করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি কোন রকম ক্লান্তি বোধ করেননি. তখন বললো আপনি কি ভেবে দেখেছেন যে পাথরটির নিকট আমরা বিশ্রাম নিচ্ছিলাম সেখানেই মাছটি অদ্ভুতভাবে সমুদ্রের মধ্যে চলে গেছে. কিন্তু আমি মাছটির কথা আপনাকে বলতে ভুলে গেছিলাম. শয়তানি আমাকে এই কথা বলতে ভুলিয়ে দিয়েছিল. বর্ণনাকারী বলেন পথটি মাছের জন্য ছিল একটি সুড়ঙ্গের মতো. 



আর তাদের জন্য ছিল আশ্চর্যজনক ব্যাপার. বললেন আমরা তো সেই স্থানটির অনুসন্ধান করছি. তারা পদচিহ্ন ধরে ধরে ফিরে চললেন এবং ওই পথের নিকট পৌঁছতে দেখলেন এক ব্যক্তি কাপড় মুড়িয়ে দিয়ে বসে আছেন তাকে সালাম দিলেন তিনি জবাব দিয়ে বললেন এখানে সালাম কি করে এলো? তিনি বললেন আমি মুসা হিজির জিজ্ঞেস করলেন? আপনি কি বনি ইজরাইল বংশীয় মুসা?  মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেন হ্যাঁ, আমি এসেছি এই জন্য যে, সত্য পথের যে জ্ঞান    আপনাকে দান করা হয়েছে, তা হতে আপনি আমাকে শিক্ষা দিবেন. 

হজরত খিজির আলাইহি সাল্লাম  বললেন, হে মূসা আমার প্রদত্ত কিছু  আছে. যা আপনি জানেন না. আর আপনিও আল্লা প্রদত্ত এমন কিছু জ্ঞানের অধিকারী যা আমি জানিনা. মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমি কি আপনার সাথী হতে পারি হিজির বললেন আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না. যে বিষয়ে আপনার জ্ঞানের আওতাধীন নয় সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করবেন কেমন করে? মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ইনশাল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোনো আদেশ আমি অমান্য করবো না সাগরের কিনারা ধরে হেঁটে চললেন.

 তখন একটি নৌকা তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল. তারা তাদেরকে নৌকায় তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন. তারা হিজিরকে চিনতে পেরে বিনা ভাড়ায় তাদেরকে নৌকায় তুলে নিলেন. যখন তারা দুজনে নৌকায় চড়লেন, তখন একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকাটির কিনারায় বসলো, এবং সমুদ্র থেকে এক ফোটা পানি পান করলো হিজির বললেন হে মূসা আমারও আপনার জ্ঞানের ধারা, আল্লাহ জ্ঞান হতে ততটুকু কমেনি যতটুকু ওই পাাখি  তার ঠোঁটের দ্বারা সাগরের পানি হ্রাস করেছে. তখন হজরত হিজির একটি কুড়াল নিয়ে নৌকাটির একটা তক্তা খুলে ফেললেন. 

তখন তাকে মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনি এটি কি করলেন? এই লোকেরা বিনা ভাড়ায় আমাদেরকে নৌকায় তুলে নিল. আর আপনি তাদেরকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য নৌকা সিদ্ধর করে দিলেন আপনি তো একটি গুরুতর কাজ করলেন, তখন কিযির আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না? বললেন আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার এই ব্যাপারে প্রতি কঠোর হবেন না. হজরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের  পক্ষ থেকে, প্রথম এই কথাটি ছিল ভুলক্রমে. 

অতঃপর তারা যখন উভয় সমুদ্র পার হলেন, তখন তারা একটি বালকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন. যে অন্যান্য বালকদের সাথে খেলা করছিল. কি্যির আলাইহি ওয়াসাল্লাম  ছেলেটির মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন।তখন মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলে উঠলেন আপনি একটি নিষ্পাপ শিশুকে বিনা অপরাধে হত্যা করলেন, আপনি খুবই খারাপ একটা কাজ করলেন হিজির বললেন আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না, তখন মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বললেন এরপর যদি আমি আপনাকে আর কোনো প্রশ্ন করি তাহলে আমাকে আর সঙ্গে রাখবেন না. 

অতঃপর উভয়ই চলতে লাগলেন চলতে চলতে তারা একটি জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট কিছু খাবার চাইলেন. কিন্তু জনপদ বাসি দুজনের মেহমানদারি করতে অস্বীকৃতি জানালেন. সেখানে তারা একটি প্রাচীর দেখতে পেলেন. যা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল. হজরত হিজির প্রাচীরটি মেরামত করে সুদৃঢ় করে দিলেন.তখন মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেন এই লোকদের নিকটে আমরা খাবার চাইলাম.

 তার মেহমানদারি করতে অস্বীকৃতি জানালো. অথচ আপনি এদের দেওয়াল সোজা করে দিলেন আপনি তো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন.কিযির আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেন এবার আমার এবং আপনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে এতক্ষণে যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি, এখন আমি তার তাৎপর্য বলে দিচ্ছি. নৌকাটির ব্যাপার ছিল এই যে সেটি ছিল কয়েকজন দরিদ্র ব্যক্তির. তারা সমুদ্র জীবিকা অন্বেষণ করতো. আমি নৌকাটিকে ত্রুটিযুক্ত করে দিতে চাইলাম. 

কারণ তাদের সামনে ছিল এক রাজা যে ভালো নৌকা পেলেই জোর পূর্বক কেড়ে নিত. তারপর যখন এটাকে দখল করতে লোক আসলো, তখন ছিদ্র যুক্ত দেখে ছেড়ে দিল. অতঃপর নৌকাবালারা একটা কাঠ দিয়ে নৌকাটি মেরামত করে নিল. আর বালকটির সূচনা নিয়েছিল কাফের. আর সে ছিল তার ঈমানদার বাবা-মায়ের বড়ই আদরের সন্তান. আমি আশঙ্কা করলাম যে সে বড় হয়ে অবাধ্যতা ও কুফুরী দ্বারা তাদেরকে কষ্ট দিবে.তাই আমি ওকে হত্যা করেছি  এবং আল্লাহতালার কাছে দোয়া করলাম যে   তাদেরকে তার চেয়ে পবিত্র ও ভালোবাসায় ঘনিষ্ঠতর একটি শ্রেষ্ঠ সন্তান দান করুন. 

আর প্রাচীরের ব্যাপার এই যে সেটি ছিল নগরের দুজন এতিম বালকের. এর নিচে ছিল তাদের গুপ্তধন. তাদের পিতা ছিলেন সৎ কর্মপরায়ণ. সুতরাং আল্লাহ তায়ালা   ইচ্ছা পোষণ করলেন যে, তারা যৌবনে পদার্পণ করে, নিজেদের গুপ্তধন উদ্ধার করুক. আমি নিজ ইচ্ছায় এসব করিনি. আপনি যে বিষয়গুলো ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি, এই হল তার ব্যাখ্যা. 

পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই আমাদের সবার উচিত  মহান আল্লাহতালার উপর বিশ্বাস রাখা এবং ধৈর্যধারণ করা, আল্লাহ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেন, সবার উচিত আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা, তো বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন.আর কাহিনীটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন,   আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আল্লাহ হাফেজ। 


প্রিয় পাঠকগণ এখানে কোন ধরনের বানান ভুল ত্রুটি থাকলে সুন্দর ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন , পাশে থাকা কালো বেল আইকন এ ক্লিক allow button এ ক্লিক করে রাখতে পারেন । যাতে আমাদের প্রত্যেকটি পোস্ট আপলোড করার সাথে সাথে আপনি পেয়ে যান । সবাইকে ধন্যবাদ আল্লাহ হাফেজ

Post a Comment

1 Comments