আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন. আরবের জমিনে একজন সাহাবী ছিলেন. যার নাম ছিল হজ্জত ধিরার বিন আল আজোয়ার. হয়তো আপনি এই নামটি আগে কখনো শুনে থাকবেন না. কারণ ওই সময় তার নাম খুবই কম চর্চা হতো. কিন্তু সে এমন একজন শক্তিশালী মানুষ ছিল যার কথা শুনলে মানুষজন তখন ভয়ে কাঁপতে শুরু করতো. তার সামনে যুদ্ধ করতে ভয় পেতো. যখন যুদ্ধ হতো যোদ্ধারা যুদ্ধের পোশাক পরে যুদ্ধ করতো. কিন্তু সে খুবই পাতলা পোশাক পরে যুদ্ধ শুরু করতো. লম্বা চুল এবং শক্তিশালী দেহ নিয়ে সে যখন যুদ্ধ করা শুরু করতো তখন তার সামনে কেবলমাত্র শত্রুর লাশ লুটিয়ে পড়তে থাকতো.
সে এতটাই দ্রুত এবং তেজীর যোদ্ধা ছিলেন যে কোন দিকে না তাকিয়ে শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যেতেন. এবং একের পর এক শত্রুকে ঘায়েল করতো. তার এরকম সাহসিকতা দেখে হজরত খালের বিন ওয়ালের রাবিয়াললাহ আনহু কেবলমাত্র তার প্রশংসাই করেননি. বরং তাকে পুরস্কৃত করেছিলেন. হযরত ওমর ফারুক রাদি আল্লাহ আনহু এর খেলাফতের মধ্যে একটি যোদ্ধ হয়েছিল. তখন হজরত ধিরার বিন আল আজোয়ার রাদেআল্লাহ আনহুর যুদ্ধের ময়দানে পৌঁছেছিল তখন শত্রু পক্ষ থেকে নিক্ষিপ্ত তীর বৃষ্টির মতো তাদের পড়ছিল. বাকি সব যোদ্ধারা সামনে আঘাতে ভয় পাচ্ছিল.
কিন্তু তারপরেও ইসলামের এই সাহসী যোদ্ধা, তার যুদ্ধ চালিয়ে যায়. ও শত্রুদের সীমানার কাছাকাছি পৌঁছে যায়. কিন্তু শত্রুরা যখন চারদিক থেকে তাকে ঘিরে ফেলে. অনেকক্ষণ যুদ্ধ করার পর তাকে আটক করে ফেলে, যখন মুসলমানর জানতে পারলেও তাকে আটক করা হয়েছে তখন খালেদ বিন ওয়ালেদ রাদিয়াল্লাহ আনহু তার বাহিনী নিয়ে তাকে উদ্ধার করার জন্য যাচ্ছিল. তখন তারা হঠাৎ দেখতে পায় এক ব্যক্তি ঘোড়ার উপর বসে শত্রুদের সীমানায় পৌঁছে তাদেরকে একের পর এক ঘায়েল করছে. সে এতটাই ভয়ঙ্করভাবে হামলা করছিল যে শত্রুরা তাকে দেখে পিছু হতে থাকে.
খালিদ বিন ওয়ালেদ এমন সাহসিকতা দেখে তার সঙ্গীদের জিজ্ঞেস করল কে এই মানুষটি, কিন্তু, সাথে থাকা কেউ তার সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি. তখন খালেদ বিন ওয়ালেদ রহমতুল্লা আলাহি বলেন এই লোকটিকে সাহায্য করো. তিনি মানুষটির উপর খুশি হন যেই মানুষটি তাদের অনেক উপকার করছে তারা যুদ্ধ করতে করতে একসম ওই মানুষটির কাছে চলে যায়. এবং তাকে জিজ্ঞেস করে তুমি কে? এত সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করছ? কিন্তু এই লোকের কোনো জবাব আসে না সামনে আসা শত্রুদের একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে. তারপর যখন আরো একবার মানুষটির কাছে চলে য়াসে তিনি আবারো জিজ্ঞেস করে তুমি কে? কিন্তু তখনও সে কোনো উত্তর না দিয়ে তার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে.
এমনিভাবে তৃতীয়বার যখন কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় তখন সে লোকটি নাকাপ থেকে এক মহিলার কন্ঠ ভেসে আসে. উত্তর আসে আমি হজরত ধিরার বিন আল আজোয়ার রাদিয়া খাওলা বিন্তে আল আজহার সেই সাথে আরো পড়লো আমি ততক্ষণ পর্যন্ত চুপ করে বসবো না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আমার ভাইকে মুক্ত করছি. তখন জিজ্ঞেস করলো তাহলে প্রথম কেন তিনি উত্তর দিলেন না.
তখন সে উত্তর দেয় আমি যদি আপনাকে আমার পরিচয় দিই আপনি আমাকে অনুমতি দেবেন না যুদ্ধ করার হযরত ধিরার আল আজোয়ার রাতিয়াল্লাহ আনহুর বোন হরজোত খাওলা বিন্তে আল আজোয়ার এর সাহসিকতা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়. তখন হজরত খালেদ বিন ওয়ালেদ রহমতুল্লা আলাহি তাকে বলে আপনার এখানে আসার কি দরকার ছিল?
আমরাই তো তাকে মুক্ত করে নিয়ে আসতাম তখন সে উত্তর দেয় ভাইয়ের উপর বিপদ যখন আসে তখন বোন সবার আগে আসবে. তারপর বাকি মুসলমানরা আসবে। অতঃপর হযরত ধিরার বিন আল-আজোয়ার এর বোন হযরত ধিরার বিন আল আজোয়ার কে মুক্ত করে নিয়ে আসে. হজরত ওমর ফারুক রাবিয়াল্লাহ আনহুর খেলাফতের সময় একটি যুদ্ধ হয়.
যখন মুসলমানদের খ্যাতি কোরদানে ছিল তখন সে একটি রোগের ফলে মৃত্যু বরণ করে. তারপর তাকে ওই জায়গাতেই দাফন করা হয়. তার কবর তখন থেকেই কোরদানে রয়েছে. যার মধ্যে সে কবর নিয়ে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে. তার কবরের ভিতর থেকে সবসময় নাকি একটি সুগন্ধ বের হতে থাকে যা চোদ্দোশো বছর যাবত বের হচ্ছে.
এটি হচ্ছে একজন সত্যিকারের হিরোর ঘটনা যার সম্পর্কে আমরা মুসলমানেরা অনেক কিছুই জানিনা. হরজত ধিরাট বিন আল আজোয়ার রাদিয়াল্লাহ আনহু এবং বোন সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের জানাতে পেরে কেমন লাগছে কমেন্ট করে জানান এবং ভালো লাগলে শেয়ার করুন, আশাকরি আবারও দেখা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ আল্লাহ হাফেজ।
1 Comments
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete