আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন। সুগন্ধি সবার কাছেই পছন্দনীয় একটি প্রসাধনী সামগ্রী মুসলিম ও অমুসলিম নির্বিশেষে প্রায় সকলেই যে কোন অনুষ্ঠানে বা বিশেষ কোন জায়গায় বেড়াতে গেলে, সুগন্ধির ব্যবহার করে থাকে. সুগন্ধি শুধুমাত্র মানসিক প্রশান্তি আনয়ন করে না. বরং শারীরিক ভাবেও এর বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে. যা mordan science এর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি. এটা প্রমাণিত যে মানুষের মনের উপর বিভিন্ন সুগন্ধের প্রভাব রয়েছে. এই সুগন্ধি মস্তিষ্কের মাধ্যমে পুরো শরীরে এমন এক প্রশান্তিময় অনুভূতি সৃষ্টি করে, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত চিন্তা থেকে আমাদেরকে নির্ভর রাখে.
অনেক সুগন্ধি ঘন ঘন মাথাব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে. উদাহরণ স্বরূপ মেন্থলের সুগন্ধি মাথাব্যথা দূর করতে খুবই কার্যকরী. এছাড়াও ল্যাভেন্ডার ক্যামোমিল এবং রোজমেরি থেকে প্রস্তুত সুগন্ধি মাথা ব্যথা এবং মাইগ্রেনের ব্যবহৃত হয়ে থাকে. যেহেতু এই আতরের সুগন্ধ মানুষের মস্তিষ্কে এবং সামগ্রিক মনমেজাজে ভালো প্রভাব রাখে তাই মানুষের আত্মবিশ্বাসেও এর ও প্রভাব রয়েছে.
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক hands heart তাই মনে করেন. কয়েক দশক ধরে তিনি সুগন্ধ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন. তিনি বলেন আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে মানবদেহে সুগন্ধের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে. নানাভাবে এই সুগন্ধ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে. যেমন নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ফুসফুসের মাধ্যমে সুগন্ধ প্রবেশ করে. আবার ত্বকের উপর কোন সুগন্ধি লাগালেও সেটা ঘটে. খাবার সময় gastro interestinal নালীর মাধ্যমে গন্ধ পাওয়া যায়. এভাবে গন্ধের অণু রক্তে প্রবেশ করে. এবং রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে.
মানবদেহের বিভিন্ন স্থানে স্মেল সেন্সর রয়েছে. গন্ধ নেবার জন্য নয়, বড় গন্ধের প্রভাব ত্বরান্বিত করতেই সেগুলি রয়েছে. সুগন্ধি আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে.
চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সুগন্ধির গবেষণা চলছে.
সুগন্ধি ব্যবহার করে চিকিৎসা দেয়ার এই পদ্ধতিকে বলা হয় এরো মাথায় ক্যান্সার থেকে শুরু করে স্মৃতি হারিয়ে যাওয়া রোগীরা তুন এই aromotherapy এর ফলে সুফল পাচ্ছেন. সুগন্ধ অসুস্থ মানুষকে সহায়তা করতে পারে বলে প্রিয়াঙ্কা ব্রাউনে মনে করে. তিনি ড্রেস ডেন শহরে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিভাগে নার্স হিসাবে কর্মরত রয়েছেন. ক্যান্সারের রোগীদের বেশ কয়েক সপ্তাহ সেখানে কাটাতে হয়. ব্যাঙ্ক বলেন আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা করে থাকি.
তবে সব সময় মনে হয়েছে রোগীর পরিচর্যা চিকিৎসা এবং ওষুধ পত্র সত্ত্বেও কোনো কিছুর যেন অভাব রয়েছে. তখন এলো থেরাপি অর্থাৎ সুগন্ধের ভিত্তিতে, পরিচর্যার সঙ্গে পরিচয় হয়. এই পদ্ধতিতে একটু আলাদা ভাবে রোগীদের পরিচর্যা করা যায়. নিয়ম মেনে হাতে রোগীর পরিচর্যার তুলনায় aeroma therapy র সাহায্যে আরো বেশি সুফল পাওয়া যায়. এই হলো সুগন্ধি ব্যবহারের উপকারিতা. যা আধুনিক বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি. এ নিয়ে আরো বিস্তর গবেষণা চলছে.
অথচ আজ থেকে প্রায় চোদ্দোশো বছর আগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাধ্যমতো সুগন্ধি ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন বিশেষ করে ঈদের দিন লোক সমাগমে গেলে এবং জুমার দিনে সুগন্ধি ব্যবহারের বিশেষ তাগিদ রয়েছে.
আমার নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেত তখন চারপাশে, সুগন্ধির মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পড়তো. লোকেরা বুঝতে পারত এই রাস্তা দিয়েই আল্লার নবী হেটে গিয়েছেন. সুগন্ধি ব্যবহার করা অন্যতম একটি সুন্না. তবে পুরুষ এবং নারীদের সুগন্ধির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে.আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত বলেন পুরুষরা এমন সুগন্ধি ব্যবহার করবে যার মধ্যে সুবাস থাকবে. কিন্তু কোন রং থাকবে না. আর নারী এমন সুগন্ধি ব্যবহার করবে যার মধ্যে রং থাকবে কিন্তু সুবাস থাকবে না.
তবে নারীদের জন্য ঘরের ভেতর যেকোনো ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করা বৈধ. বিজ্ঞানের বর্তমান আবিষ্কার থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে কেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সুগন্ধি এতটা প্রিয় ছিল আর কেনই বা তিনি সবাইকে সুগন্ধি ব্যবহারের আদেশ দিয়েছেন. আমাদের উচিত দুনিয়াবী উপকারিতা না খুঁজে প্রতিটি সুন্না যথাসম্ভব পালন করা. এটি একজন প্রকৃত মমিনের বৈশিষ্ট্য. নিঃসন্দেহে এতে আমরা দুনিয়া এবং আখিরাত দু'জায়গাতেই সফল হব, হে আল্লাহ আপনি আমাদের প্রত্যেককে সুন্দর এবং সুষ্ঠভাবে আদায় করার তৌফিক দান করুন।
বন্ধুরা আল্লাহ হাফেজ, আজ এই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর কন্টেনড বা আর্টিকেল টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
1 Comments
It was good
ReplyDelete