পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা অঞ্চল কোনটি? ----Al Hadi

 

পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা অঞ্চল কোনটি, পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান বা দেশ কোনটি, পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা স্থান বা দেশ কোনটি, কোন দেশের তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি,

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গা কোনটি  তাহলে এ প্রশ্নের জবাবে আপনি কি বলবেন? আজ আমরা এমনই  একটা জায়গা নিয়ে আলোচনা করব । আমাদের পৃথিবীর আজব জায়গা গুলোর   মধ্যে অন্যতম সেন্ট্রাল সাইবেরিয়ার একটি ছোট্ট শহর ওই মিয়া কন. এই শহরটির তাপমাত্রা ডিপ ফ্রিজের তাপমাত্রা তিন গুণ বেশি. এখানে তাপমাত্রা এতই ঠান্ডা যে ফুটন্ত গরম পানি শূন্যে ছুড়ে দিলে মাটিতে পড়ার আগেই তা বরফ হয়ে যায়. তে চলুন এই দেশ  সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক 

রাশিয়ার উত্তরপূর্ব কোনে অবস্থিত ওই মিয়া কসকি জেলার এক পৌর শহর ওই মিয়া কন. ওই মিয়া কোন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র সাতশো মিটার উঁচুতে অবস্থিত, কিন্তু এর শীতল হবার কারণ হলো, ভূপ্রকৃতির এক বিশেষ অবস্থান. এর আশেপাশে কোন সমুদ্র না থাকার কারণে চরম ভাবাপন্ন, শীতল তাপমাত্রা প্রশমিত হতে পারে না এবং বসতি উপত্যকার অত্যন্ত নিচের দিকে অবস্থিত. দুটি অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এখানকার ঠাণ্ডা বাইরে যেতে পারে না. ওই মিয়া কর নদীর নামের এই নামকরণ করা হয়েছে. 

সাইবেরিয়ান আঞ্চলিক ভাষায় ওই মেয়াকন অর্থ Frozen water বা যে পানি কখনো জমে যায় না. এই নদীর তলদেশে প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রবাহ থাকায় নদীর উপরে পানি জমে বরফ হয়ে গেলেও নিচের সেই উ পানির সব সময় তরল অবস্থায় থাকে. অত্যন্ত ঠান্ডার কারণে ওই মিয়া কনকে বলা হয় পোল অফ কোল্ড. এখানে শুধু হাড় হিম করা ঠান্ডাই নয়. এটি অত্যন্ত দুর্গম ও বটে. ওই মিয়া কনের সবচেয়ে নিকটবর্তী শহর থেকে এখানে পৌঁছাতে সময় লাগে টানা দুইদিন দুই রাত. 

বরফের ওপর বরফের আস্তরণ জমে এ রাস্তা কাচের মতো পিচ্ছিল হয়ে থাকে. সামান্য একটু এদিক ওদিক হলেই নিশ্চিত বিপদ. দু হাজার এগারো BBC তে প্রচারিত একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এই রাস্তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক রাস্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়. সোভিয়াত আমলের জসেপ ইস্টারিন, তৎকালীন রাজনৈতিক বন্দীদেরকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার এই রাস্তা তৈরি করেন. 

চরম প্রতিকূল আবহাওয়া এই রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি লোক মারা গেছে. কাজ করতে করতে যারা মারা যেত তাদেরকে রাস্তার সমাহিত করা হতো. এজন্য এই রাস্তাকে বলা হয় রোড অফ ব্রোনস বা হাড় দিয়ে তৈরি রাস্তা. বিগত প্রায় শত বছর ধরে ওই মিয়া কনের বাসিন্দারা একই রকম জীবন যাপন করে আসছে. এ খাবার পানির কষ্ট সবচেয়ে বেশি. এখানে কোন পানি সরবরাহ নেই পাইপের ভেতর পানি প্রবাহিত হবার আগেই তা জমে বরফ হয়ে যায়. 

কারণ ডিপ ফ্রিজের চেয়েও তিন গুণ বেশি ঠান্ডায় পানি তরল না থাকার কথা. আর সে জন্যই ঘর গরম রাখার জন্য যে কাঠ পোড়ানো হয় সেখানেই তারা মিশিয়ে দেয় বরফের টুকরো. এই বরফ গলে পানি উৎপন্ন হয়. তাই তারা পান করে. শুধু পানিই নয় প্রতিনের খাবার জোগাড় করাও এখানে বেশ কষ্টকর. ওই মিয়া বাসিন্দাদের প্রধান খাবার হলো ঘোড়ার মাংস আর তাই এই ঘোড়াগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি. এখানকার ঘোড়াগুলো এই চরম ভাবাপন্ন তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে. 

তারা  চব্বিশ ঘন্টা খোলা পরিবেশে থাকে তবে একটা ঝামেলা আছে তাহলো এসব ঘোরার শরীরে বাইরের অংশে বাইরে বরফ জমে যায়. আর ঘোড়াগুলোকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত শক্ত চিরুনি দিয়ে নিয়মিত তাদের শরীর থেকে বরফ ছড়াতে হয়. গ্রীষ্মকালে ওই মিয়া কনের দৈর্ঘ্য থাকে প্রায় কুশ ঘন্টা আর শীতকালে এখানকার দিনের দৈর্ঘ্য হয় মাত্র তিন ঘন্টা সে সময় তাপমাত্রা পঞ্চাশ ডিগ্রি নিচে নেমে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা খুব অসুবিধায় পরে যায় তাপমাত্রা পঞ্চাশ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে বাইরে বের হওয়া অনিরাপদ মনে করা হয়. 

সেসময় এখানকার একমাত্র স্কুলটিও ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়. এখানে কোন খাবার বা ফলমূল জমে এতই শক্ত হয়ে যায় যে তার খাবার উপযোগী থাকে না. ওই এর জমে যাওয়া কলা দিয়ে আনায়াসে হাতুড়ির কাজ করতে পারবেন. শীতকালে কাপড় কাচার কথা ভাবাও যায় না. কারণ ফুটন্ত গরম পানিতে কাপড় ধুলেও তা আর জমে এমন শক্ত হয়ে যায় যে কাপড় ব্যবহারের উপযোগী থাকে না. উনিশশো বিশ সালে ওই মা কোনে মাইনাস বাহাত্তর ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যা ইস্থায়ীবসতি পূর্ণ এলাকায় রেকর্ড করা পৃথিবীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আর তাই একে বলা পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল শহর. 

বিগত কয়েক দশকে ওই মিয়া কনের জনসংখ্যা কমে গেছে ব্যাপক হারে. বর্তমানে ছোট এই পৌর শহরে প্রায় পাঁচশো থেকে নশো জন লোক বসবাস করে. এই জনসংখ্যার মধ্যে োনো লম্বা মানুষ নেই বরং এখানে নিয়মিত যারা বাস করে তারা দিন দিন আরও খাটো হয়ে যাচ্ছে. তাই ওই মিয়া কনকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় deep reach থেকেও বেশি কিছু বলা যেতে পারে. 

এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে পারেন, আর আর্টিকেলটি  কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আল্লাহ হাফেজ। 

Post a Comment

0 Comments