ইমাম আবু হানীফা রাঃ এর বিস্ময়কর ঘটনা । ---Al Hadi

 

ইমাম আবু হানিফা রহ. এর জীবনী, তিনটি প্রশ্ন এবং বিস্ময়কর বালক এর ঘটনা,ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহ আলাইহির হাদিস,ইমাম আবু হানিফা রহ. এর উক্ত,

আসসালামু আলাইকুম বন্বুরা অনেক বছর আগে তাবেঈনদের সময়ে তাবিইনদের সময় মানে সাহাবীদের পরের সময় সেই সময়ে বাগদাদ ছিল ইসলামের এক বিখ্যাত শহর. ইসলামিক সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল  বাগদাদ, বিখ্যাত সব আলেম এখানেই বসবাস করতেন. এটি ছিল ইসলামিক জ্ঞানের কেন্দ্র. একদিন রোমের রাজা একজন দূতকে মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনটি প্রশ্নসহ পাঠালেন. দূত শহরে য়ে খলিফাকে জানালেন যে সে রোমের রাজার কাছ থেকে তিনটি প্রশ্ন এনেছেন. মুসলিমদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তার উত্তর দেওয়ার জন্য. খলিফা সকল আলেমদের একত্র হতে বললেন এবং একটি উচ্চ স্থানে দাঁড়ালেন এবং বললেন আমি এসেছি তিনটি প্রশ্ন নিয়ে যদি আপনারা এর উত্তর দিতে পারেন আমি এই স্থান ত্যাগ করবো প্রচুর সম্পদ রেখে যা আমাকে রোমের রাজার দিয়ে দিয়েছেন. 

প্রশ্নগুলো হলো এক আল্লাহর আগে কি ছিল? দুই, আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আসেন? তিন, এই মুহূর্তে আল্লাহ কোন কাজে নিয়োজিত আছেন? সবাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন. এর মধ্যে এক আলেমের পুত্র তার বাবাকে বলল, বাবা আমি এই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে পারবো. ছেলেটি খলিফার কাছে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার জন্য অনুমতি চাইল. খলিফা তাকে অনুমতি দিলেন. প্রথম প্রশ্নের জবাবে ছেলেটি দূতকে জিজ্ঞেস করলো. 

আপনি কি গুনতে জানেন? সে বলল, হ্যাঁ, তাহলে দশ থেকে উল্টোর দিকে গুনুন. রমের দূত গুনছে. নয়, আট, এভাবে এক পর্যন্ত গিয়ে সে গণনা থামালো. ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো একের আগে কি? একের আগে তো কিছুই নেই. ঠিক আছে. গাণীটিক একের আগে যদি কিছুই না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে আশা করেন এই এক আল্লাহ এর আগে কিছু থাকবে যা নিশ্চিত সত্য ও চিরস্থায়ী স্পষ্ট. ছেলেটির স্পষ্ট উত্তরে লোকটি হতবিহবল হয়ে গেল, কিছু অস্বীকার করতে পারল না.

 এরপর সে জিজ্ঞেস করলো তাহলে এখন বলো আল্লাহ কোন দিকে মুখ করে আছেন? বালকটি বলল একটা মোমবাতি আনেন. তাতে আগুন জ্বালান. মোমবাতিটি জ্বালানো হলো. বালকটি কে জিজ্ঞেস করলো এখন বলুন আগুনের শিখা কোন দিকে মুখ করে আছে. সে বলল এটা তো চতুর্দিকে আলো ছড়াচ্ছে. এটা কোন একদিকে নির্দিষ্ট করে নেই. তখন ছেলেটি বলল যদি এই বস্তুর চতুর্দিকে আলো ছড়াতে পারে তাহলে আপনি কিভাবে এরকম অনুমান করতে পারলেন আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে যিনি আকাশ-কাশ ও পৃথিবীর অধিপতি সকল আলোর আলো তাল আর সকল দিকে যে কোন সময় মুখ করে থাকেন, প্রমাণ দূত বোকা বোনে গেল. তিনি অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হলেন. 

এতটুকু একটি ছেলে তার সব প্রশ্নের এত সাবলীলভাবেও দৃশ্যে যে তার যুক্তি প্রমানের কাছে সে কোন রূপ দ্বিমত পোষণ করতে পারছে না. তাই সে বেপরোয়াভাবে, শেষ প্রশ্নটি করতে শুরু করলো. কিন্তু প্রশ্ন করার আগে ছেলেটি বলল, থামুন. এখানে একমাত্র আপনি শুধু প্রশ্ন করছেন, আর একমাত্র আমিই সেই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি. এটা তখনই স্বচ্ছ হবে, যদি আপনি উপরে থেকে আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে আসেন আর আমি আপনার জায়গায় যায়. যাতে উত্তরগুলো প্রশ্নগুলোর মতো সবাই স্পষ্ট শুনতে পারে. 

এই আহ্বান রোমান দুতের যুক্তি মনে হল তাই সে উপর থেকে নিচে নেমে এলো, ছেলেটি উঁচু স্থানে দাঁড়ালো. তখন কয়েকবার জোরে জোরে তার শেষ প্রশ্নটি করলো. বল এখন আল্লাহ কি করছেন? ছেলেটি বলল, এই যখন উঁচু জায়গায় এক অবিশ্বাসীকে খুঁজে পান, তখন তিনি তাকে নিচে নামিয়ে আনেন. এবং যে আল্লাহর একত্ব বিশ্বাস করে তিনি তাকে উপরে ওঠান ও উপর প্রতিষ্ঠিত করেন, রোমান দুতের আর কিছু বলার থাকলো না, সেই স্থান ত্যাগ করা ছাড়া. এই ছেলেটি পরবর্তীতে বড় হয়ে ইসলামের এক মহাজ্ঞানী পন্ডিত হিসেবে আবির্ভূত হলেন. এবং তার নাম ইমাম আবু হানিফা রাঃ। 

আবারও বিদায় নিচ্ছি সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ আল্লাহ হাফেজ। 

Post a Comment

0 Comments