আসসালামু আলাইকুম, বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন. হজরত মুস আঃ ও ফেরাউনের ঘটনা কুরানে বার বার উল্লেখ করার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো এলাহী কিতাব ধারী ইহুদি নাসাদের পেছনের কথাগুলো স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং শেষ নবীর উপরে ঈমান আনার পক্ষে যৌক্তিকতা উপস্থাপন করা। বন্ধুরা আজ আলোচনা করব মুসা আলাইহি সালামের এর কয়েকটি মোজেজা নিয়ে। তো বন্ধুরা চলুন দেরী না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা
উল্লেখ পরবর্তী রাসূল দাউদ সোলাইমান ও ইসা আঃ সবাই ছিলেন বনি ইসরাইলের সম্প্রদায়ভুক্ত এবং তাদের প্রতি প্রেরিত নবী. ছিলেন এদের সবার মূল ও স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব. দেখানো দুটি মোজাজার প্রক্রিয়ায় ফেরাউন ও তার দরবারের লোকেরা জাদুকরদের জড়ো করার সিদ্ধান্ত নেয়. তারা জাদুর মাধ্যমে মুসা আঃ ও তার ভাই হারুনকে পদস্থ করে জনগণের ওপর তাদের প্রভাব কমানো বা বিলুপ্ত করা সম্ভব হবে বলে ভেবেছিল. কিন্তু অবশেষে এখন থেকে তিন হাজার বছরের আগে চৌঠা জিলহজ তারিখের ঘটনায় ও বিশিষ্ট রাসুল হজরত মুসা আঃ জাদুকরদের উপর বিজয়ী হয়েছিলেন.
এক প্রকাশ্য জনসভা ও উৎসবের আয়োজন করে দুর্ধর্ষ জালিম ফেরাউন সুদক্ষ জাদুকরের মাধ্যমে মুসা নবীকে অপমানিত করতে চেয়েছিল এবং বিজয়ের ব্যাপারে সে নিশ্চিত ছিল প্রথমে জাদুঘরকে ও ফেরাউনকে আবারো একাত্মবাদ মেনে নেওয়ার এবং মূর্তিপূজা পরিহারের আহ্বান জানান. ও অদ্বিতীয় আল্লার সঙ্গে, অন্য কাউকে শরীক করা হলে, তার চেয়ে মারাত্মক পরিণতি হবে সে সম্পর্কেও তিনি তাদের সতর্ক করে দেন.
তাদের জাদু বা ভেলকি বাজিতে তিনি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রচে বলেও অভিহিত করেন. ফেরাউন বারো হাজার দক্ষ জাদুকর জড়ো করেছিল. তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ পাড়ার জাদুকরের নাম ছিল শামন, সাদুর, গাদুর, খোদাত ও মুসাফা ছিল অন্য চারজনের গুরু তারা মিশরে পৌঁছে শুনে যে হজরত মুসা আঃ ঘুমানোর সময় তার লাঠিটি অজগর হয়ে তাকে পাহারা দেয়.
ফলে তারা সাহস হারিয়ে ফেলে. কারণ জাদুকররা ঘুম পড়ার পর তাদের জাদুর কার্যকারিতা থাকে না. এ জাদুর প্রতিযোগিতা হয়েছিল মিশরের আলেকসান্দেরিয়া শহরে. সেখানে স্থানীয় অধিবাসীরা ফেরাউনের সবাস ও সেনা সামন্তরা উপস্থিত ছিল. ফেরাউন নিজে মঞ্চে বসে এই দৃশ্য দেখছিল জাদুকররা হজরত মুসা আঃ কে অলৌকিক বিষয় প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা তার পক্ষ থেকে শুরু করার আহ্বান জানালে তিনি সবিনয়ে তাদেরকে জাদুর কসরত আগে দেখাতে বলেন.
তারা মাটিতে দণ্ড ও দড়ি রেখে সম্মোহনী জাদু বিদ্যার প্রয়োগ শুরু করে. ফলে উপস্থিত জনতার, মনে হলো যে প্রাণহীন দণ্ড ও রশিগুলো হঠাৎ করে সাপের মতো নড়েচড়ে এগিয়ে আসছে. তাপ ও আলোর প্রভাবে এমনটি হতো. ফেরাউন ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের মুখে এ সময় ছিল বিজয়ের হাসি. এই অবস্থায় আল্লাহর নির্দেশে.
হযরত মুসা আঃ তার লাঠি নিক্ষেপ করলে সেটা এক বিশাল অজগরে পরিণত হয়. এবং তা জাদুকরদের জাদু বিদ্যার সব কলকাঠি গিলে ফেলে. ফলে পরিস্থিতি পরিবেশ পাল্টে যায়. অনেকেই ভয়ে বেহুশ হয়ে পড়ে. ফেরাউন ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা. এমন অপ্রত্যাশিত দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে.
এবং ক্ষমতা হারানোর প্রমাদ গুনতে থাকে. আরো গুরুত্ব ঘটনা হলো এই প্রকাশ্য অলৌকিক কান্ড দেখে জাদুকররা বুঝতে পারে যে এটা কোনো চোখে ধুলা দেওয়ার ঘটনা বা চালাকি নয় বরং ঐশী বাস্তবতা. তাই তারা প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে স্বীকার য়েছে. সত্যি আল্লাহর নবী. এবং সেই জাদুকররা হজরত মুসা আঃ এর প্রতি ঈমান আনে অপদস্ত ফেরাউন তাদের হাত,
পা কেটে ফেলার ও গাছের সঙ্গে লোহার বড় পেরেক দিয়ে করে হত্যার হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও জাদুকররা ঈমানের ওপর অবিচল থাকে. আল্লাহর কি মহিমা সেদিন সকালেও জাদুকররা ছিল কাফির বা অবিশ্বাসী. জোহরের আগেই তারা জাদু দেখায়. জহোরের সময় তারা ঈমান আনে আর আসরের সময় ক্রুদ্ধ ফেরাউনের নির্দেশে, তাদের হাত পা কাটা হয়. মাগরিবের সময় তাদের পুরুষবিদ্ধ করা হলে তারা বেহেস্ত বাসি হয়.
ফেরাউন চারশো বছর বেঁচে ছিল. সে খনো রোগাক্রান্ত হয়নি. তার খাবার ছিল বড় জাতের কিসমিস. ফেরাউন, প্রতিরক্ষা প্রাচীর বেষ্টিত দুর্গ শহরে থাকতো. সে একটি বাঘ তার কাছে রাখত. কিন্তু মুসা নবির আগমনের পর ওই বাঘ ভয়ে পালিয়ে যায়. হজরত মুসা আঃ ফেরাউনের শহরের যেই দরজাতে পৌঁছাতেন সেই দরজা গুলো আপনা আপনি খুলে যেত.
ফেরাউনের প্রাসাদের দরজায় পৌঁছালে প্রহরীরা তাকে ঢুকতে না দিয়ে বলে আল্লাহ আর কাউকে পাননি. যে তোমাকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন এই কথা শুনে রুষ্ট হয়ে তিনি তার লাঠি দিয়ে ওই দরজায় আঘাত করলে তা খুলে যায়. এবং ফেরাউনের দরবার পর্যন্ত সব দরজা এভাবেই খুলতে খুলতে তিনি ফেরাউনের কাছে, পৌঁছে তাকে, নিজের রিশালতের কথা জানান.
ফেরাউন প্রমাণ দেখতে চাইলে তার লাঠি বিশাল এক অজগর হয়ে যায়. ও তার ফেরাউনের দিকে মুখ খুলে এগিয়ে যেতে থাকে. এছাড়াও ড়াউন তার সদর দরজায়. আগুন জ্বলতে দেখে সে ও তার পরিসররা ভয়ে ছুটছিল.
ফলে বহু মানুষ পায়ের নীচে পিষ্ট হয়ে মারা যায়. ফেরাউন এ অবস্থায় আল্লাহর দোহাই দিয়ে ওই লাঠি তুলে নিতে বলে. তা তুলে নেওয়া মাত্রই আবার তা লাঠি হয়ে যায়. জাদুকররা ঈমান আনায় মিশরের বহু মানুষ ঈমান এনেছিল. তাদের সবাইকেই ওজির হামানের পরামর্শে, বন্দী করেছিল এরপর ঘটেছিল ফেরাউনের দলবলের ওপর নানা আজাব, বা খোদাই শাস্তি, বনি ইসরাইলের বন্দীদের মুক্ত করে, হজরত মুসা আঃ তাদের নিজের সঙ্গে নিয়ে যান নীল নদের তীরে.
মুসা আঃ তার লাঠি দিয়ে নীল নদের পানিতে জোরে আঘাত করে. সঙ্গে সঙ্গে নীল নদের পানি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়. আর মাঝখানে তৈরি হয় রাস্তা এবং তার সহযাত্রীরা পানির মাঝে তৈরি হওয়া রাস্তা দিয়ে পার হয়ে যায়.
কিন্তু ফেরাউন ও তার দলবল তাদের ধাওয়া করতে গিয়ে রাস্তা দিয়ে পার হওয়ার সময় পানির প্রচন্ড ঢেউয়ে সকলেই ডুবে মারা যায়. হজরত মুসা আঃ সবচেয়ে বড় পাঁচজন রাসূলের মধ্যে অন্যতম. অন্য চারজন রসুল হলেন হজরত নূহ আঃ হজরত ইব্রাহিম আলাইহি সালাম হজরত ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.
বন্ধুরা পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই যুগে যুগে এরকম ফেরাউন নমরুদ এরকম হাজারো শয়তান আসবে এবং তারা ধ্বংস হয়ে যাবে তবে আমাদেরকে আমাদের ঈমানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে এবং আমাদেরকে আমাদের ঈমান শক্ত রাখতে হবে, আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে সাচ্চা ঈমানদার হওয়ার তৌফিক দান করুক, আমিন তো বন্ধুরা তাহলে আজ এই পর্যন্তই সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ আর আমাদের পোষ্ট টি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সবার সাথে শেয়ার করুন।
0 Comments